বেলুচিস্তানকে ঘিরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অনেক দিন ধরেই নীরব একটা ‘যুদ্ধ যুদ্ধ’ খেলা চলছে। ভারতের উচ্চপদস্থ গোয়েন্দা কর্মকর্তা অজিত ডোভালের পরিকল্পনা ফাঁস হওয়ায় এটি নিয়ে সম্প্রতি পাকিস্তানে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়েছে। ভারত প্রতিবেশী দেশগুলোতে কীভাবে গোয়েন্দা পরিকল্পনার ছক কষার চেষ্টা করে এই ছোট্ট লেখায় তার একটা ধারণা পাওয়া যাবে। পাকিস্তানি বিশ্লেষক আব্দুর রসুল সায়েদ’র কলামটি জবানের পাঠকদের জন্য অনুবাদ করা হয়েছে।
দেশের প্রধান গোয়েন্দা দপ্তর এবং রাষ্ট্রপ্রধান মোদির ধৃষ্টতায় শুরু হয় এই অঞ্চলের ক্ষমতার ভারসাম্যকে নষ্ট করার অভিযান। তার কঠোর প্রবৃত্তিতেই শুরু হয় একের পর এক নীতি-বিবর্জিত কৌশল। তিনি এই অঞ্চলে ভারতের কর্তৃত্ব কায়েমে উন্মাদপ্রায় হয়ে ওঠেন। এটা তার প্রিয় রাজনৈতিক ও আদর্শিক বন্ধুদেরও অনেক দিনের লালিত আকাঙ্ক্ষা। আর এই লক্ষ্য অর্জনে তার প্রয়োজন ছিল এমন এক ব্যাক্তির যার অন্তরেও এমন আক্রমণাত্মক মনোভাব রয়েছে।
একারণেই তিনি বেছে নেন ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর (আইবি) এর সাবেক পরিচালক অজিত ডোভালকে। অজিত এমন একজন মানুষ যিনি পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যেকোন গুপ্ত অভিযানে যথেষ্ট পারদর্শী। তাকে সবদিক থেকেই একটি বাজপাখির সাথে তুলনা করা যায় এবং তা সন্দেহাতীত ভাবেই। আর এই দাবি স্বয়ং র (রিসার্স এন্ড এনালিটিকাল উইং) এর সাবেক প্রধান এ.এস দৌলত করেছিলেন। তিনি তার এক বক্তব্যে অজিতকে ‘বাজপাখি অজিত ডোভাল’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।
বিগত কয়েক বছরে ভারতের আক্রমণাত্বক রূপ ধারণা করার পেছনে তার মেধা ও বুদ্ধি একটা মূখ্য ভূমিকা পালন করেছে। যদিও সিকিম সীমান্তে চীন বিরোধী অবস্থানে থাকার কারণে ভারতের সরকারি গণমাধ্যমগুলো তাকে ‘প্রধান ষড়যন্ত্রকারী’ হিসেবে আখ্যা দেয়। গুরু মোদির মত তাকেও কঠিনভাবে হিন্দুত্ববাদের ওকালতি করতে দেখা যায়। সে মারাত্মক কট্টরবাদী হিন্দু জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। বলতে গেলে সে মোদির চোখ।
ডোভাল-মোদির এই জুটি এই অঞ্চলের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ, বিশেষ করে পাকিস্তানের জন্য। ডোভাল পাকিস্তানে ৭ বছর অবস্থান করেছিল। সে প্রায়ই স্থানীয় মসজিদগুলোতে নামাজ পড়তে যেত। স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ করার জন্য সাধারণ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করত। তার উর্দুতে ভালো দখল আছে, তাছাড়া ইসলামিক জ্ঞান সম্পর্কেও সে অনেক পারদর্শী। এতকিছুর পরও পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ তাকে ধরতে পারেনি। পরবর্তীতে সে এও দাবি করেছিল যে, পাকিস্তানে অবস্থানের ফলে দেশটির নানা দুর্বলতা নখদর্পণে।
সাধারণত আমরা যখন সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে কথা বলি তখন একে সাধারণত জ্ঞানহীন, অমানবিক ইত্যাদি বলেই আখ্যা দেই। হ্যাঁ, সন্ত্রাববাদ মূলত তাই। তবে তা শুধুই কৌশলগত দিক থেকে। প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে রাজনৈতিক বা আদর্শিক উদ্দেশ্য হাসিলের একটি মাধ্যম মাত্র।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসেই ডোভাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে তার পৈশাচিক মন্তব্য ছুঁড়ে দেন। তিনি বলেন, “পাকিস্তান এমন এক প্রতিবেশী যারা এখনও আমাদের রক্তক্ষরণ করে চলেছে। যদি কখনো আমাদের রাষ্ট্রের সুরক্ষা ভেঙে যায়, তখন আমরা কি করব? আমাদের একটি টেকসই ও স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে। সুতরাং প্রথমে আমাদের বাস্তবতাটাকে মেনে নিতে হবে। দ্বিতীয়ত, সমস্যাটিকে সংজ্ঞায়িত করতে হবে। এরপরেই আমাদের প্রতিক্রিয়া দেখাতে হবে। প্রতিক্রিয়া দেখাতে হলে আমাদের আগে জানতে হবে ‘সন্ত্রাসবাদ’ কি?”
সাধারণত আমরা যখন সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে কথা বলি তখন একে সাধারণত জ্ঞানহীন, অমানবিক ইত্যাদি বলেই আখ্যা দেই। হ্যাঁ, সন্ত্রাববাদ মূলত তাই। তবে তা শুধুই কৌশলগত দিক থেকে। প্রকৃতপক্ষে সন্ত্রাসবাদ হচ্ছে রাজনৈতিক বা আদর্শিক উদ্দেশ্য হাসিলের একটি মাধ্যম মাত্র। এর পর সে আবার ‘রাজনৈতিক ইসলাম’ সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেন। বলেন “তো, এখন কিভাবে পাকিস্তান কে পাকড়াও করা যায়? আপনারা জানেন, শত্রুদের প্রধানত তিনভাবে ব্যস্ত রাখতে হয়। প্রথম হল রক্ষণাত্মক নীতিতে। যেভাবে চৌকিদার বা দারোয়ান কাজ করে সেভাবে। এরপরেরটা হচ্ছে রক্ষণাত্মক-আক্রমণাত্মক নীতি।
নিজেদের রক্ষার্থে আমরা সেখানে পৌছাতে চাই সেখানে যাওয়ার জন্য আক্রমণ শুরু করা। আমরা এখন রক্ষণাত্মক নীতির পথ অবলম্বন করছি। শেষ নীতিটা হচ্ছে আক্রমণাত্মক। আমরা যখন রক্ষণাত্মক-আক্রমণাত্মক নীতি অবলম্বন করব তখন আমরা পাকিস্তানের ভঙ্গুর সমস্যা গুলো নিয়ে কাজ করব। এটা হতে পারে অর্থনৈতিক, অভ্যন্তরীণ, রাজনৈতিক, আন্তর্জাতিক ভাবে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রাখার চেষ্টা করার মধ্য দিয়ে । অথবা তাদের আফগানিস্তান নীতিতে পরাজিত করতে পারি, তাদের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ভূমির সুরক্ষার ভারসাম্য তৈরীকে কঠিন করে তুলতে পারি। এই আক্রমণ যে কোন ভাবেই হতে পারে।’
ডোভাল আরো বলেন “আমি অতি বিস্তারিত আলাপে যাব না। আমরা রক্ষণাত্মক নীতিতে থাকায় তোমরা আমাদের উপর ১০০ পাথর ছুড়ে মারবে তাতে আমরা ৯০ টি পাথরের আঘাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারলে বাকি ১০ টা ঠিকই আমাদের গায়ে লাগবে। একারণেই কখনো জেতা হবে না আমাদের। হয় হেরে যাবো অথব অচলাবস্থার সৃষ্টি হবে। তোমাদের যখন ইচ্ছা পাথর ছুড়বে, যখন ইচ্ছা শান্তি ঘোষণা করবে এবং তোমাদের ইচ্ছা মতই সংলাপ ডাকবে। এই আক্রমণাত্মক-রক্ষণাত্মক নীতিতে আমরা দেখতে চাই এই ভারসাম্যের সমতা কোথায় গিয়ে ঠেকে। পাকিস্তানের দুর্বলতা আমাদের চেয়ে অনেক বেশী। যখনই তারা দেখলো ভারত রক্ষণাত্মক নীতি থেকে সরে রক্ষণাত্মক-আক্রমণাত্মক নীতিতে চলে গিয়েছে তখনই তারা বুঝতে পারবে যে তাদের কোন সামর্থ্য নাই।“ এখন ডোভাল এর ঐ উক্তি যেটি সবেচেয়ে বেশী আলোচিত হয়েছিল “তোমরা মুম্বাইয়ের ঘটনা ঘটাতে পারো তবে বেলুচিস্তান হারাবে তোমরা।“ এটাই পাকিস্তানের টনক নাড়িয়ে দেয়ার মত একটি উক্তি ছিল। ডোভাল তত্ত্বের এটাই ছিল চৌম্বুক অংশ যা এখন পুরাপুরি পরিস্কার সবার কাছে ।
তিনি আরো বলেছেন “পাকিস্তানকে আমাদের কোনই দরকার নেই। তারা যদি রাষ্ট্রীয়ভাবেই সন্ত্রাসবাদকে মুছে ফেলতে না পারে তবে তালিবানরাই তাদের রক্তক্ষরণের কারণ হবে। দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে তোমরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নিচ্ছ। তৃতীয়টি হচ্ছে, তাদের অর্থ, অস্ত্র, লোকবল সহ সকল সাহায্য বন্ধ করা। সন্ত্রাসবাদের অর্থায়ন প্রতিহত করতে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন বন্ধ করা প্রয়োজন। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসীদের ৫০০ কোটি রুপি অর্থায়ন করে আমরা অর্থায়ন করব ১৮০০ কোটি রুপির যেন তারা আমাদের পক্ষে কাজ করে। তারা পেশাদার সৈনিক। তোমার কি মনে হয় তারা মহান যোদ্ধা? কখনই না। সুতরাং আরো গুপ্ত পদক্ষেপে যাও। আমরা অর্থ দিয়েই তাদেরকে আমাদের পক্ষে আনতে পারি, আমরা বড় রাষ্ট্র। সুতরাং মুসলিম সংগঠনগুলোর সাথেই কাজ করতে হবে। তারাই বেশী আগ্রহী। সেখানে খারাপ পরিবারের সংখ্যা খুবই নগণ্য। এর পরেই উচ্চ প্রযুক্তি ও গুপ্ত অভিযানের মাধ্যমে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।“অবশ্যই তা গোপনীয় ভাবে হতে হবে অনেকটা কমান্ডো পরিসরে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান, সংলাপের মত শব্দগুলো ডোভাল তত্ত্বে খুজে পাওয়া যাবে না। বরঞ্চ এই তত্ত্ব উগ্র দেশপ্রেমে আচ্ছন্ন যা বাজ পাখির চেয়েও ক্ষিপ্র।
ডোভালের মত অনুযায়ীই তারা এই মূহুর্তে এসে সন্ত্রাসীদের তাদের পক্ষে নিতে পারে এবং বেলুচিস্তান নিয়েও তাদের যে পরিকল্পনা তা সম্পন্ন করার চেষ্টা চালাতে পারে। এটা এখন আর মোটেও গোপন নেই যে ভারতই বেলুচিস্তানের অশান্তির মূল কারণ।
এই কারনেই ঐ পৈশাচিক রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আমাদের কৌশল আগে থেকে সমন্বিত করে রাখতে হবে। ভারত কখনই আমাদের দেশকে শান্তিতে থাকতে দেবে না। এরা আগেও আমাদের দেশের উন্নতির পেছনে সবচেয়ে বড় বাধা হয়েছিল এবং এখনো তাই আছে। ভারত পাকিস্তানকে একঘরে করার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবেই সর্বোচ্চ অভদ্রতায় পৌছতে দ্বিধাবোধ করবে না। সবচেয়ে খারাপ ব্যাপার হচ্ছে ডোভালের তত্ত্বমতে ইতোমধ্যে ভারত আমাদের দেশে গুপ্ত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে এবং সামনেও চালাবে।
এইবার তারা আরো বেশি ধ্বংসাত্মক হতে পারে। ডোভালের মত অনুযায়ীই তারা এই মূহুর্তে এসে সন্ত্রাসীদের তাদের পক্ষে নিতে পারে এবং বেলুচিস্তান নিয়েও তাদের যে পরিকল্পনা তা সম্পন্ন করার চেষ্টা চালাতে পারে। এটা এখন আর মোটেও গোপন নেই যে ভারতই বেলুচিস্তানের অশান্তির মূল কারণ।
বেলুচিস্তান লিবারেশন অর্গানাইজেশন (বিএলও) এর পার্দিলি যেদিন ভারতে ২০১৫ সালের অক্টোবরের ৪ তারিখে সম্মেলন করল সেদিনই জনসাধারণের সামনে তা পরিস্কার হয়ে গেল। পার্দিলি ২০০৯ সাল থেকেই ভারতে বসবাস করছে। নবাবজাদা হার্বিয়ার মারি বেলুচিস্তানের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা, বিএলও’ এর প্রধান। তিনি ও বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মির নেতারা পার্দিলিকে নির্দেশ দেয় ভারতে সম্মেলন ও গণমাধ্যম গুলোতে তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে।
এদিকে ভারতের স্বনামধন্য একটি সংবাদ মাধ্যম দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসই তাদের একটি প্রতিবেদনে বেলুচিস্তানে ভারতের গুপ্ত অভিযানের কথা নিশ্চিত করেছে। ২০১৩ সালের ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়, সেনা প্রধান ভিকে সিংহ এর আমল শেষ হওয়ার পূর্বেই সেনাবাহিনী গুপ্ত অভিযান “টেকনিক্যাল সার্ভিস ডিভিশন (টিএসডি)” এর সকল নথি ধ্বংস করে ফেলে। সুশান্ত সিংহ লিখেছিলেন যে “সকল তথ্য, তদন্ত প্রতিবেদন (যা তার অবসরের পরের) থেকে জানা যায় টিএসডি মারফত ভারত অন্যান্য দেশে নূন্যতম আটটি গুপ্ত অভিযান পরিচালনা করেছে।“
“টিডিএস এর নথি থেকে এও জানা গেছে যে ২০১১ সালের অক্টোবর এবং নভেম্বরে ভারতের গোয়েন্দা বাহিনীর তহবিল থেকে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের অঞ্চল ভিত্তিক স্বাধীনতাকামীদের অর্থ সাহায্য দেওয়া হয়।“
সে সময় দুটো সম্মুখ অভিযান হয়েছে, আটটি গুপ্ত অভিযান এবং একটি ঘুষ দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এখন এটা খুঁজে বের করা কি খুবই কষ্ট যে ‘প্রতিবেশী রাষ্ট্র’ টি ছিল পাকিস্তান এবং ‘অঞ্চল’ ছিল ‘বেলুচিস্তান’? অজিত ডোভালের উপস্থিতিতে ভারতের পাকিস্তানের সাথে শান্তি প্রতিষ্ঠার গল্প শুধুই কুমিরের কান্না মাত্র। তাদের গোয়েন্দা সংস্থা এখন চাঁদের খোঁজ করছে।
আমরা এটা ধারণা করতেই পারি যে বেলুচিস্তানে আরো অনেকগুলো গুপ্ত অভিযান হতে পারে। মোদি ও ডোভালের মত নির্লজ্জরা তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য কোন পথই বন্ধ রাখবে না। একারণেই আমাদের অনেক সক্রিয় ও সতর্ক থাকতে হবে। এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাদের নিজেদের ভেতর ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা। কথায় আছে না “ঐক্য থাকলে ছোট ছোট রাজ্যগুলোও বিস্তার লাভ করে আর বিবাদে বড় রাজ্যগুলোও ধ্বংস হয়।”
সম্মৃদ্ধ জাতি গঠনের জন্য চাই উন্নত চিন্তা। গনতান্ত্রিক দেশ ও সমৃদ্ধ জাতি গঠনে শুধু তথ্যযুদ্ধ এবং ইস্যু দিয়ে ইস্যু চাপা দেয়া নয়, দরকার মননশীল সাংবাদিকতা। একতরফা ভাবনা বা মতের প্রতিফলনের বাইরে সত্য ও প্রজ্ঞার সন্নিবেশ ঘটাতে বিশ্লেষণী সাংবাদিকতার কোন বিকল্প নেই। কিন্তু এই উদ্যোগ আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ ছাড়া সম্ভব নয়। ডোনেট করুন এবং বুদ্ধিবৃত্তিক জাতিগঠনের গণতান্ত্রিক সংগ্রামে অংশীদার হোন।
মোবাইল ব্যাংকিংঃ Bkash & Nagad (personal): 01677014094
https://paypal.me/jobanmedia